Ticker

6/recent/ticker-posts

দুইটি ডাইরীর গল্প ..............


মেয়েটির ডাইরী:- বিয়ের প্রতি কোন কালেই আমার আগ্রহ ছিলোনা ৷ বিয়ে মানে নিজের স্বাধীন জীবন অন্যের অধীনে চলে যাওয়া ৷ অর্থাৎ পরাধীন হয়ে পরা ৷ কিন্তু তারপরও মা বাবার জোরাজোরিতে বিয়েটা করতেই হলো ৷ তবে বাসর রাতেই স্বামীকে জানিয়ে দিয়েছি যে বিয়েতে আমার মত ছিলোনা ৷ বাধ্য হয়ে বিয়েটা করতে হয়েছে ৷ সুতরাং অামার সামনে যেন স্বামীর অধিকার ফলাতে না আসে ৷ কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সেও বল্লো এই বিয়ের প্রতি তারও নাকি কোন আগ্রহ নেই ৷ বলেই বালিশ নিয়ে গিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো ৷
ছেলেটির ডাইরী:- সবে মাত্র চাকরীতে জয়েন করেছি ৷ এর মধ্যেই বাবা মা বিয়ের জন্য উঠেপরে লেগেছে ৷ অনেকটা জোর করেই মেয়েটির সঙ্গে বিয়েটা করালো ৷ বাসর ঘরে যেইনা বলতে যাবো যে আমি তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবো না অমনি সে বলে উঠলো বিয়েতে নাকি তার মত ছিলো না ৷ আমিও বালিশটা নিয়ে সোফায় এসে শুয়ে পরলাম ৷

মেয়েটির ডাইরী:- আজ প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছিল ৷ বৃষ্টি হলেই না ভিজলে আমার ভালোলাগে না ৷ তাই আজও ভিজছিলাম ৷ তখনি সে এসে বল্লো বৃষ্টিতে যেন না ভিজি ৷ কারন জ্বর হলে কে দেখবে ৷ এই জন্যই বিয়ে করতে চাইনি ৷

ছেলেটির ডাইরী:- বিকেলে বৃষ্টি হচ্ছিল ৷ বাসায় এসে দেখি সে (বউ) ঘরে নেই ৷ ছাদে গিয়ে দেখি বৃষ্টিতে ভিজতেছে ৷ অপরূপ লাগছিল তাকে দেখতে ৷ এত বড় একটা মেয়ে বাচ্চাদের মতো কি সুন্দর করে বৃষ্টিতে ভিজতেছে ৷ আমি অপলক তাকিয়ে রইলাম ৷ একটুপরে আমার দিকে চোখ পড়তেই তাকে বৃষ্টিতে ভিজতে বারন করে চলে এলাম ৷

মেয়েটির ডাইরী:- আজকে আমার প্রচন্ড জ্বর এসেছে ৷ একটু আগে সে (স্বামী) এসে ঝারি দিয়ে গেলো আমাকে ৷ তারপর নিজের হাতে খাবার আর ঔষধ খাইয়ে দিয়ে চলে গেলো ৷ রাতেও খুব জ্বর ছিলো ৷ শীতে খুব কাপছিলাম ৷ তখনি সে এসে আমার গায়ে চাদর দিয়ে গেলো ৷ ভালোই সবা যত্ন করেছে আমার ৷

ছেলেটিরাডাইরী:- বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাধিয়েছে সে ৷ কি আর করা ৷ সেবা যত্ম করতে হলো আমাকে ৷ রাতে মনে হয় ঠান্ডা একটু বেশীালেগেছিলো তার ৷ গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে ছিলো ৷ দেখে খুব মায়া লাগছিলো আমার ৷ তাই চাদর টা গায়ে দিয়ে দিলাম ৷ .মেয়েটির ডাইরী:- আজকে অনেকটা সুস্থ্য আমি ৷ সম্পূর্ন ক্রেডিট তার (স্বামী) ৷ তাই ভাবলাম তার জন্য নিজের হাতে কিছু রান্না করি ৷ মায়ের কাছ থেকে তার পছন্দের কিছু খাবারের নাম জেনে সেগুলো রান্না করলাম ৷ রান্না কেমন হলো বুঝলাম না ৷ কারন খাওয়ার পর তার কোন রি-একশান দেখলাম না ৷ 

ছেলেটির ডাইরী:- সারাদিন কোন কাজে মন বসেনি আমার ৷ গতরাতের ঠান্ডায় গুটিমেরেঘুমিয়ে থাকা মুখটির কথা বার বার মনে পরছে ৷ আজকে আমার জন্য আমার পছন্দের খাবার গুলো নিজ হাতে রান্না করেছিলো ৷ খারাপ হয়নি ৷ আবার অতটা ভালোও হয়নি ৷ .

মেয়েটির ডাইরী:- আজকে আমার জন্য সে (স্বামী) এক জোড়া পায়েল নিয়ে এসেছে গাধাটা ৷ পায়েল গুলো এনে আমার হাতে দিলো ৷ পায়ে পড়িয়ে দিলে কি হতো ৷ 

ছেলেটির ডাইরী:- আজকে তাকে পায়েল গিফ্ট করলাম ৷ তার পা গুলো খালি খালি লাগছিলো ৷ পায়েল গুলো পড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছা ছিলো ৷ কিন্তু পরে ভাবলাম কিনা কি মনে করে ৷ 

মেয়েটির ডাইরী:- আমি আজ খুব খুশি ৷ কারন সে (স্বামী) আজ আমাকে প্রপোজ করেছে ৷ জীবনে অনেক ছেলেই প্রপোজ করেছে আমাকে ৷ সবাইকে ফিরিয়ে দিয়েছি ৷ ভাবছি এই প্রপোজটা গ্রহন করবো ৷ 

ছেলেটার ডাইরী:- আমি মনে হয় তার (স্ত্রী) প্রেমে পরেছি ৷ সারাদিন কোন কাজে মন বসাতে পারিনা ৷ তার কথাই বারবার মনে পরে ৷ জীবনে কোনো মেয়েকে প্রপোজ করি নাই ৷ তাই আজ একগুচ্ছ গোলাপ দিয়ে তাকে প্রপোজটা করেই ফেললাম ৷ কান্তু সে বললো ভেবেচিন্তে উত্তর দেবে ৷ 

কয়েকদিন পর :- এখন অার তারা দুইটি ডাইরীতে নিজের গল্প লিখে না ৷ এখন তারা একটি ডাইরীতে নিজেদের গল্প লিখে ৷
Reactions