Ticker

6/recent/ticker-posts

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কিছু মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি

পূর্বে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরণের ভয়ংকর মৃত্যুদন্ডের নিয়ন প্রচলিত ছিল যা শুনলে বা দেখলে গা ছম ছম করে। আর এই পোস্টটি দুর্বল চিত্তের মানুষের জন্য নয়। বর্তমানে অনেক দেশেই মৃত্যুদন্ড ওঠে গেছে। আর থাকলেও তা ফাঁসী,ইঞ্জেকশন আর ইলেকট্রিক চেয়ারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

১. সিদ্ধ করা
দুর্ভাগা ব্যাক্তি কে একটি জল ভর্তি পাত্রর মধ্যে রাখা হয়। কল্পনা করতে ছিল প্রথমে ঠান্ডা. তারপর একটি অগ্নি পাত্র নীচে দেয়ি হত যাতে পানি ধীরে ধীরে গরম হয় এবং বন্দী জিবন্ত সেদ্ধ হতে থাকে। এই ভাবে এক সময় সে মারা যেত।. শাস্তির এই পদ্ধতিটি প্রায় 500,000 বছর বয়সী এবং চর্চা হত প্রাচীন চীন এ। নিশ্চিত চীন কিছু পাশবিক শাস্তি আবিস্কার করেছিল এবং এটাও বলা হয় যে মৃত্যুদন্ড এই পদ্ধতি যুক্তরাজ্য বিদ্যমান ছিল 1500 শতক পর্যন্ত। জাপান,ফিজি,পাপুয়া নিউগিনিতেও এই শাস্তির তথ্য রয়েছে। এমনকি মোঘল আমলে ১৬৭৫ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমাওলে ইসলাম না গ্রহণ করায় শিখ নেতা ভাই দয়ালাকে এভাবে হত্যা করা হয়।
এই মৃত্যুদন্ড এই পদ্ধতি যীশু খ্রীষ্টের অনুসরণ করে। একটি ক্রুশকাঠ এ বন্দি ব্যাক্তিকে পেরেক দিয়ে হাত পা কাঠের বা লোহার ক্রুশে দিয়ে উন্মুক্ত স্থানে ছেড়ে দিত। বেশির ভাগ সময় বন্দী সাধারণত রক্ত ঝরা থেকে মারা যেত। কোন কারনে যদি সে মারা না যেত তবে ক্ষুধা বা তৃষ্ণা দ্বারা মারা যেত। সে সমস্ত বন্দী ছিল ভাগ্যবান, সে শুধু তীব্র ঠান্ডা বা তাপ দ্বারা মারা যেত।
২.ক্রুসবিদ্ধ করা
এই মৃত্যুদন্ড এই পদ্ধতি যীশু খ্রীষ্টের অনুসরণ করে। একটি ক্রুশকাঠ এ বন্দি ব্যাক্তিকে পেরেক দিয়ে হাত পা কাঠের বা লোহার ক্রুশে দিয়ে উন্মুক্ত স্থানে ছেড়ে দিত। বেশির ভাগ সময় বন্দী সাধারণত রক্ত ঝরা থেকে মারা যেত। কোন কারনে যদি সে মারা না যেত তবে ক্ষুধা বা তৃষ্ণা দ্বারা মারা যেত। সে সমস্ত বন্দী ছিল ভাগ্যবান, সে শুধু তীব্র ঠান্ডা বা তাপ দ্বারা মারা যেত। ৩৫-৬০ কেজি ওজনের ক্রুসগুলি আসামীকে বয়ে নিয়ে যেতে হত। শুধু তাই নয় আরও লজ্জা দেয়ার জন্য নগ্ন করা হত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নির্দেশ না মানার জন্য ব্যারাকে সৈনিকদের এভাবে একদিন ঝুলিয়ে রাখার শাস্তি দেয়া হত।
৩.জীবন্ত চামড়া তুলে নেয়া
বর্তমান ইরাকের পূর্বসূরী আসেরীয়রা বা মেক্সিকোর এযটেকরাএই প্রথায় শাস্তি দিত।মধ্যযুগে ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সেও এইধরনের শাস্তি দেয়া হত।মধ্যযুগে ১৩০০-১৪০০ সালের দিকে এই ধরনের রেওয়াজ ছিল। এর মত নিষ্ঠুর পদ্ধতি আমি আর শুনিনি । এটি বন্দিকে জীবন্ত রেখে ত্বকের সমগ্র শরীর থেকে চামড়া অপসারণ করা হত । এটি ছিল একটি প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড প্রদান সার্বজনীন পদ্ধতি । মাঝে মাঝে ব্যাথার তীব্রতা বাড়ানোর জন্য লবণ মাখানো হত। এই ভাবে অশেষ যন্ত্রনা ভোগ করে বন্দি মারা যেত।
৪.বিশেষ বিশেষ অঙ্গ কর্তনের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড
এই পদ্ধতিতে দেহের প্রধান অঙ্গগুলি কাটা হত বিশেষ করে পেটের।জাপান,ইংল্যান্ড ,নেদারল্যান্ড, বেলজিয়ামে এই পদ্ধতি চালু ছিল। এটি ছিল সবচেয়ে গুরুতর শাস্তি । তখনকার দিনে চোর এবং ব্যভিচারে ছিল বেশি তাই এই শাস্তি প্রচলন হয়েছিল। ইংল্যান্ডে disembowelment বেশিরভাগই ছিল রেওয়াজ । এই শাস্তি হল অত্যাবশ্যক অঙ্গ আপনার শরীর থেকে এক এক করে ছুড়ি বা ধারালো কোন অস্ত্র দ্বারা অপসারণ করা হত বন্দি মারা না যাওয়া পর্যন্ত।
৫. বিশেষ চাকা
এই বিশেষ যন্ত্র ক্যাথরিন এর চাকা নামেও পরিচিত ছিল । এ পদ্ধতিতে বন্দি কে একটি বড় চাকার সাথে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রশস্ত ব্যবধানযুক্ত করে আবদ্ধ করা হত এবং তা ঘুরানোর সাথে সাথে অঙ্গ প্রসারিত হত। চাকা ঘোরানোর সময় একটা হাতুড়ি দিয়ে একজন ব্যক্তির শুধুমাত্র ব্যক্তির হাড় এ নিয়মিত বিরতিতে আঘাত করা হত । এই প্রক্রিয়ায় মৃত্যু সাধারণত খুব দীর্ঘ হত। সাধারণত একজন ব্যক্তির প্রতিটি অঙ্গ নষ্ট করা হত । এটা অবশ্যই একটি দীর্ঘ ও যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু। যদি সব বন্দি ছিল ভাগ্যবান যারা বুকে বা পেটে একটি সরাসরি ঘা গ্রহণ করে অবিলম্বে মৃত্যু বরন করত।
৬. বিদ্ধ
এ পদ্ধতিতে উলঙ্গ করে বন্দির হাত-পা বেঁধে তার পায়ু পথে সুচালো একটি দণ্ড ঢুকিয়ে তাকে তার উপর বসিয়ে দণ্ডটি খাঁড়া করে দেওয়া হতো। বন্দি তার নিজের শরীরের ভারে আস্তে আস্তে নিচের দিকে নেমে যেত। অনেক সময় খুঁটিটির মাথা সুচালো না করে ভোঁতা রাখা হত যাতে হৃৎপিণ্ড বা অন্যান্য প্রধান অঙ্গ বিদ্ধ হয়ে তাড়াতাড়ি মারা না যায়। এতে অপরাধী প্রচন্ড কষ্টে মারা যেত। এ পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে অনেক সময় লাগত এমনকি এক থেকে দু’দিন সময়ও লাগত।
৭. মাথা পিষ্ট
মৃত্যদণ্ড কার্যকর করার এই পদ্ধতি টি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উদ্ভাবিত, সুদূর কোনো দেশের পদ্ধতি নয়। এ পদ্ধতিতে বিশাল আকৃতির হাতি তার পা দিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির মাথা থেঁতলে দিতো। এক্ষেত্রে আবার হাতিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো, যাতে সে ধীরে ধীরে পায়ের চাপ বাড়ায়। যাতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ কষ্ট ভোগ করে মারা যায়।
৮. পুড়িয়ে হত্যা
বন্দি ব্যক্তি সাধারণত মৃত্যু পর্যন্ত অবর্ননীয় যন্ত্রনা ভোগ করত যতক্ষন না ঘাড় এবং মুখ আগুন লেগে মারা নাযেত। পুড়িয়ে হত্যা করার পদ্ধতি শুরু হয় মুলত জোয়ান অব আর্ককে পুড়িয়ে মারার পর থেকে। সে সময় তার বয়স ছিলো মাত্র ১৯ বছর। ১৪৩১ সালের ৩০ মে তাকে হত্যা করা হয়। জোয়ান অব আর্ক ছিলেন পূর্ব ফ্রান্সের একজন সামান্য কৃষকের ঘরে জন্মানো বাক্তি যিনি ফরাসী সেনাবাহিনীর জন্য বিরল যুদ্ধজয় এনে দিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বেই ফ্রান্স তাদের বেহাত হয়ে যাওয়া ভূমি পুনুরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়। তিনি সপ্তম চার্লসের ক্ষমতারোহনের পেছনেও পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছিলেন। অথচ দেশের জন্য এতো গৌরব বয়ে আনা সত্বেও তাকে বার্গুনডিয়ানরা আটক করে ইংরেজদের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখানে একটি খৃষ্টান আদালতের রায়ে তাকে পুড়িয়ে মারা হয়। তার মৃত্যুর ২৪ বছর পর সপ্তম চার্লসের উদ্যোগে পোপ তৃতীয় ক্যালিক্সটাস তার পুনর্তদন্তে জোয়ানকে নির্দোষ সাব্যস্ত করেন এবং তাকে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়।
৯. করাতে কেটে মৃত্যুদণ্ড
এই পদ্ধতিটি চালু ছিলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ এশিয়তেও। এক্ষেত্রে মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে উল্টো করে দুই পা দুই দিকে ফাঁক করে বেঁধে রাখা হতো। এরপর মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির যৌনাঙ্গ বরাবর করাত রেখে দেহকে মাঝ বরাবর কেটে ফেলা হতো। আর উল্টো করে ঝোলানোর কারণে ব্যক্তিটির মস্তিষ্ক যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত পেতো, যাতে তিনি শরীরের মাঝ বরাবর কেটে ফেলার ব্যথা সম্পূর্ণটাই অনুভব করতে পারে। মধ্যযুগের অমানবিক মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।
লিং চি:
মৃত্যুদণ্ডের এ পদ্ধতিটি চিনে চালু ছিলো। এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে লোকালয়ে এনে বেঁধে ফেলা হতো। এরপর একজন জল্লাদ বিশেষ ছুরি দিয়ে ওই ব্যক্তির দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে ধীরে ধীরে মাংস কেটে নিত। দীর্ঘক্ষণ ধরে অধিক যন্ত্রণা ভোগ করে শেষে ব্যক্তিটি মারা যেত।
Reactions

Post a Comment

0 Comments