Ticker

6/recent/ticker-posts

পোস্ট মর্টেমে কিভাবে করা হয়


থার্ড ইয়ার থেকে মেডিকেল স্টুডেন্টদের ফরেনসিক ক্লাস শুরু হয় , ক্লাসের একটা পার্ট হচ্ছে পোস্ট মর্টেমে উপস্থিত থাকা , কিভাবে করা হয় দেখা ও শেখা ।

আমরা একদম প্রথম যে দুইটা কেস পেয়েছিলাম , দুইটাই মেয়ে , অল্প বয়েসী । দুইটাই সুইসাইডাল কেইস । একজন গলায় ফাঁস , আরেকজন বিষ খেয়ে মরা।
প্রথমেই ডেড বডির শরীর থেকে কাপড় সব খুলে ফেলা হয় । ডাক্তার , স্টুডেন্ট , পুলিশ এবং ডোম ( যারা কমনলি লাশ কাটে, হ্যান্ডেল করে ) সবাই উপস্থিত থাকে সেখানে । এরপর গলা থেকে নাভির নিচ পর্যন্ত ছুরি দিয়ে চামড়া কাটা হয় , এরপর গরুর যেভাবে চামড়া ছাড়ায় সেভাবে চামড়া ছাড়ায় , এরপর বুকের পাঁজর যেভাবে কাটে সেটাকে ঠিক কাটা বলা যায় না , ভাঙে বললেই ভাল , গরুর হাড় যেভাবে কশাইরা কাটে অনেকটা সেরকম ।
কন্ঠনালী অনেকটা টেনে হিঁচড়ে বের করে জিহ্বা সহ , এরপর হার্ট , লিভার , পাকস্থলি কেটে প্রিজার্ভ করা হয় । এরপর যেটা বেশি খারাপ লাগে যখন মগজ বের করে । আমাদের দেশে ইলেক্ট্রিক স' নাই মাথার  খুলি কাটার , ওরা যেটা করে - কাঠমিস্ত্রির দোকানে হাতুড়ি বাটাল হয়ত দেখে থাকবেন , ওই হাতুড়ি বাটাল দিয়ে বাড়ি দিয়ে দিয়ে খুলি ফাটানো হয় , খুলি ভাঙার  শব্দটা খুব অদ্ভূৎ । তার আগে মাথার চামড়া সহ চুল মোটামুটি বলা যায় হ্যাঁচকা টানে খুলে ফেলা হয় , তখন মানুষটাকে মানুষ মনে হয় না ।  এক্সামিন শেষে ব্রেইনটাকে পেটের ভেতর পুরে দিয়ে সেলাই করে দেয় । সত্যি বলতে কোরবানির সময় গরু ছাগল জবাই থেকে মাংস কাটা সবই দেখেছি , করেছি । আমার কাছে মনে হয়েছে গরু ছাগলও অনেক যত্ন নিয়ে কাটে মানুষ , কারণ ওটার চামড়া দামী , মাংস দামী । চামড়াটা যেন অক্ষত থাকে , চামড়া যেন থেতলে না যায় অনেক কিছু মেইনটেইন করা লাগে । শুধু পোস্ট মর্টেমের সময় যেভাবে ডেড বডির সাথে বিহেভ করা হয় সেটা দেখে প্রত্যেক ডাক্তার আর মেডিকেল স্টুডেন্ট মনে মনে এই দোয়া করতে কখনও ভুলে না - খোদা , আমাকে এমন মৃত্যু দিও না যে আমার মৃতদেহের পোস্ট মর্টেম করার প্রয়োজন পড়ে । 



এইগুলো সাধারণত পাবলিকলি না বলাই ভাল , কিন্তু এতকিছু আজকে বললাম শুধু নিউজ ফিডে একটা সুইসাইডাল মৃত্যুর খবর বেশ ঘুরপাক খাচ্ছে দেখে ।
সেই পুরাতন প্রেম , বিয়ের আগে দৈহিক সম্পর্ক ,  এরপর হাজার বছরের সেই পুরাতন ইতিহাস - বিয়ের ব্যাপারে ছেলের টালবাহানা , এরপর মেয়েটার
সুইসাইড । মরার আগে ছেলেটাকে দায়ী করে যাওয়া । একবার আমার ফ্রেন্ড লিস্টের একটা মেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিল - এই দেশে যতটুকু শালীনতা এখনও আছে ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণেই । মেয়েটা হিন্দু , এইরকম স্ট্যাটাস সাধারণত মুসলমানেরাও খুব একটা ওপেনলি দেয় না । যাই হোক , সেই সুইসাইডের দোষ কাকে দেব ? মেয়েটাকে ? ছেলেটাকে ? নাকি বাবা মাকে ? আজকাল এইসব ধর্মীয় মূল্যবোধের কথা বলাও তো মুশকিল । আর কে কাকে শেখাবে ?
এই জেনারেশনের কাছে এইসব রিলেশন প্রেম প্রীতিই মূখ্য বিষয় , ব্রেইনের কর্টেক্স জুড়ে এইছাড়া আর কিছু আছে বলেও মনে হয় না , টাইমলাইন জুড়ে সব এইসবই দেখি প্রতিদিন । ফেইসবুকে এইরকম ফ্লার্টিং এর কাহিনী সবাই পড়ে জানে , শুধু কেন যেন " আমার ও এইরকম না " এটিচ্যুড প্রত্যেকটা মেয়েই ধারণ করে । মেয়েদের বলে রাখি - দুনিয়ার সব ছেলেকেই দেহ দান করার পর ফ্লার্ট বলার আগে শুরু থেকেই ফ্লার্ট ভাবাটা সেইফ , আমি ছেলে হলেও এই কথাই বলব , নিজের নিপাট ভদ্র কলেজ ফ্রেন্ডটাও যখন এক মেয়ের লাইফ নষ্ট করে বলে এই মুহূর্তে আমার বিয়ে করা সম্ভব না , এরপর আরেক মেয়েকে ফ্যামিলিয়ালি বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় তখন পুরুষ জাতির কাউকে বিশ্বাস করতে বলার মুখ থাকে না । আর যে তোর লাইফ নষ্ট করল তার জন্য নিজের 
লাইফ শেষ না করে দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বেঁচে থাক নারে , বাপ মায়ের এতদিনের জমানো ভালবাসা এত সস্তা করে দেওয়ার অধিকার কেউ তোকে দেয় নাই । আর একদল আছে এদের প্রতি সিম্প্যাথি দেখিয়ে আহা উহু করে এই ওয়েকে উৎসাহিত করে । Remember , তোমার বোনটা বা ভাইটা তোমার ওই আহা উহু দেখে মনের মধ্যে গেঁথে নেয় suicide is a noble way to get public sympathy । আর হ্যাঁ , যাদের মন এখনও বলে সুইসাইড জিনিসটা
মন্দ না , তাদের বলি - এই স্ট্যাটাসের প্রথম অংশটা আবার একটু পড়ে নাও । মনে রাইখ , তুমি মরে মনে করছ হিরো হয়ে যাচ্ছ , অথচ ডোমের ছুরি আর হাতুড়ি বাটালের নিচে তোমার মূল্য কোরবানির গরুর সমানও থাকে না । If you still think suicide is a good way , then get ready for Jahannam.



Reactions

Post a Comment

0 Comments